যেভাবে ফেসবুক আইডি হ্যাক হওয়া থেকে রক্ষা পাবেন
ফেসবুক বর্তমান যুগের সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। অনেকেই সামজিক যোগাযোগ বা ব্যবসায়িক প্রয়োজনে ব্যবহার করে থাকেন এই জনপ্রিয় মাধ্যমটি।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে ফেইসবুক প্রোফাইল বেদখল (হ্যাকড) ও নিষ্ক্রিয় (ডিজেবল) হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে অহরহ।
কিছু নির্দেশনা মেনে চললেই আপনার এই জনপ্রিয় মাধ্যমটি সুরক্ষিত রাখতে পারবেন। সেগুলো হলো-
আপনার অ্যাকাউন্টটি অবশ্যই আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম ও জন্ম তারিখের সঙ্গে মিল রেখে তৈরি করবেন। না থাকলে আজই সেটা করে নিন।
তাহলে কোনো কারণে অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় হলে আপনার পরিচয়পত্র জমা দিলে অ্যাকাউন্টটি ফেরত দিয়ে দেবে ফেইসবুক কর্তৃপক্ষ।
ফেসবুকে আপনার জন্ম তারিখ, সাল, ইমেইল ও ফোন নম্বর অনলি মি করে রাখুন।
কখনোই আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, স্মার্ট কার্ড, স্কুল-কলেজের আইডি কার্ড বা বৈধ কোনো আইডি কার্ড ফেসবুকে আপলোড করবেন না।
বিদেশ ভ্রমন কালে অনেকেই নিজের পাসপোর্ট আপলোড করে থাকেন। তা থেকে বিরত থাকুন। মনে রাখবেন আপনার পরিচয়পত্রের কপি অন্যের কাছে থাকলে সেটা আপনার জন্য অনেক ঝুঁকিপূর্ণ।
উক্ত ব্যক্তি চাইলে ওই পরিচয়পত্র দিয়ে আপনার অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় ও দখল নিতে পারবে।
ফেসবুকে থাকা সব নিরাপত্তা সুবিধা (ফিচার) অন করে রাখুন।
অবশ্যই বিশ্বস্ত কমপক্ষে পাঁচজন বন্ধু যুক্ত করে রাখবেন। তবে সেটা মাঝে মাঝে চেক করবেন। আপনার বিশ্বস্ত বন্ধুর তালিকা থেকে কারো অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছে কিনা।
হয়ে গেলে নতুন কাউকে যোগ করে আবার ন্যূনতম ৫ জন যোগ করে রাখুন।
প্রোফাইল পিকচার গার্ড ব্যবহার করা ভালো। যারা ব্যক্তিগত গোপনীয়তা (প্রাইভেসি) রাখতে চান, তারা প্রোফাইল লক অপশন ব্যবহার করতে পারেন।
এতে করে শুধু আপনার বন্ধু তালিকায় (ফ্রেন্ড লিস্ট) থাকা বন্ধুরা আপনি যা দেবেন, তা দেখতে পারবেন।
কঠিন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করবেন। পাসওয়ার্ড বিভিন্ন সংখ্যা, চিহ্ন এবং শব্দ দিয়ে বানালে বেশ কঠিন হয়। ডিকশনারি ওয়ার্ড ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। কখনো নিজের নাম বা ফোন নম্বর পাসওয়ার্ড হিসাবে ব্যবহার করবেন না।
অপরিচিত কারও দেয়া লিংকে ক্লিক করবেন না। ফেইসবুকের ন্যায় দেখতে এমন ফিসিং সাইটে কোনো প্রলোভনে লগইন করবেন না।
আপনার ইমেল ঠিক আছে কি না নজর রাখবেন।অনেক ইমেইল আছে যেটা ১ বছর ব্যবহার না করলে সেটা নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়।
সেক্ষেত্রে সুবিধাবাদীরা আপনার নামে ইমেইল অ্যাকাউন্ট খুলে খুব সহজেই আপনার অ্যাকাউন্ট দখল করে নিতে পারবে।
টু স্টেপ ভেরিফিকেশন অবশ্যই চালু রাখবেন।
কীভাবে ফেসবুকে আপনার পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করবেন
ফেইসবুকের পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করতে প্রথমে ফেইসবুক ডটকমে গিয়ে ব্যবহারকারীকে ইউজার নেইম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে ফেইসবুকে লগ-ইন করতে হবে। এরপর ওপরের ডান পাশে থাকা অ্যারো আইকনে ক্লিক করার পর Settings-এ ক্লিক করতে হবে।
তারপর বাঁ পাশে থাকা security and login-এ ক্লিক করলে নতুন একটি পেইজ চালু হবে। সেখান থেকে login-এর নিচে থাকা change password-এ ক্লিক করলে পাসওয়ার্ড পরিবর্তনের জন্য একটি উইন্ডো দেখা যাবে।
সেখান থেকে current ঘরে বর্তমানে থাকা পাসওয়ার্ডটি দিয়ে new ঘরে নতুন পাসওয়ার্ড দিতে হবে।
re-type new ঘরেও নতুন পাসওয়ার্ডটি আরেকবার দিতে হবে।
সব শেষে save changes অপশনে ক্লিক করলেই নতুন পাসওয়ার্ড কার্যকর হবে।
ফেসবুকের ফেক প্রোফাইল থেকে সাবধান থাকবেন কীভাবে
ফেসবুকে আলাপ থেকে প্রেম, প্রতারণা, অবশেষে আত্মহত্যা। এমন ঘটনা এখন প্রায় রোজই শোনা যায়। ফেক প্রোফাইলের আড়ালে অপরাধমূলক কাজে ভরে গেছে সোশ্যাল মিডিয়া। আবার প্রতিশোধ স্পৃহার বশেও অনেকে তৈরি করেন ফেক প্রোফাইল। সতর্ক থাকুন।
বোঝার চেষ্টা করুন, ফেক প্রোফাইল কিনা।
১। অচেনা কাউকে বন্ধু করার আগে দ্বিতীয়বার ভাবুন। ফ্রেন্ড লিস্টে বন্ধু সংখ্যা বাড়ানোর প্রতিযোগিতায় হুটহাট কাউকে অ্যাড করবেন না।
অচেনা রিকোয়েস্ট এলে প্রশ্ন করুন। জানতে চান তিনি কেন আপনাকে রিকোয়েস্ট পাঠালেন। উত্তর শুনে বিশ্বাসযোগ্য মনে হলে তবেই অ্যাকসেপ্ট করুন।
২। প্রোফাইল ভাল করে পড়ুন। কী করেন, কোথায় থাকেন, কোথায় পড়াশোনা করেছেন সে বিষয়ে স্পষ্ট তথ্য আছে কিন দেখুন। কোনও সংস্থার নাম বা ইউনিভার্সিটির নাম নিয়ে সন্দেহ হলে গুগলে খুঁটিয়ে দেখুন। বয়স খুব অল্প অথচ নিজেকে প্রফেসর বা সিইও বলছেন, এমন মানুষ ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠালে অবশ্যই ভেবে দেখবেন। প্রোফাইল আকর্ষক করতে এরা অনেক কিছু করে থাকেন।
৩। ফ্রেন্ডলিস্ট খুঁটিয়ে দেখুন। এনার বন্ধুরা কি বেশিরভাগ স্থানীয়? নাকি বেশির ভাগই বিদেশি? যদি দেখেন বন্ধুরা অধিকাংশই বিদেশি তাহলে অবশ্যই মানুষটা সন্দেহজনক।
৪। মিউচুয়াল ফ্রেন্ডে চেনা বন্ধ থাকলেও সতর্ক থাকুন। চেনা বন্ধুকে জি়জ্ঞাসা করুন আপনাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট মানুষটিকে চেনেন কিনা। বিশ্বাসযোগ্য উত্তর পেলে তবেই অ্যাড করুন।
৫। ফোটো খুঁটিয়ে দেখুন। বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানোর, পরিবারের সঙ্গে ছবি রয়েছে? কেউ কি এনাকে ট্যাগ করেছে? করে থাকলে তাদের প্রোফাইল কী বলছে? ছবিগুলো কি সন্দেহজনক? প্রোফাইলে কি অত্যন্ত হ্যান্ডসাম কোনও যুবক বা সুন্দরী মহিলার ছবি? নাকি ছবি নেই? এমনটা হলে সতর্ক থাকুন।
৬। ঠিক কী ধরনের জিনিস পোস্ট করেন ইনি? অধিকাংশই কি কোনও ছবি বা কোটেশন? কোনও মৌলিক পোস্ট রয়েছে কিনা খুঁটিয়ে দেখুন। যদি থাকে তবে তা নিয়ে বন্ধুরা মন্তব্য করেছেন কিনা, লাইক করেছেন কিনা, শেয়ার করেছেন কিনা অবশ্যই দেখে নিন।
৭। যদি ইতিমধ্যেই অ্যাড করে থাকেন তবে খেয়াল রাখুন ইনি কী বলছেন সেই দিকে। কথাবার্তা কি অসঙ্গত? নিজের সম্পর্কে অতিরিক্ত তথ্য দেন নাকি একেবারেই দেন না? এই দুটোই কিন্তু সন্দেহজনক। সন্দেহ হলে পাল্টা প্রশ্ন করুন।
৮। ফোন নম্বর- অল্প আলাপেই নিজের ফোন নম্বর, ইমেল অ্যাড্রেস দিয়ে দেবেন না। যদি দেখেন প্রথম দিনই ইনি আপনার নম্বর চাইছেন, দেখা করতে চাইছেন তবে অবশ্যই সতর্ক হোন।
৯। প্রেম- শুরু থেকেই আপনার প্রতি ভাললাগা প্রকাশ করেন বা প্রেম নিবেদন করেন তাহলে নির্দ্বিধায় এনাকে ফ্রেন্ড লিস্ট থেকে বাদ দিন। ফেক প্রোফাইল থেকে এই ধরনের প্রস্তাব প্রায়ই আসে।
১০। অশালীন প্রস্তাব- এমটা হলে অবিলম্বে ব্লক করুন। যদি চ্যাট করতে করতে আপনাকে ছবি পাঠাতে বলেন বা আপনার সব ছবি লাইক করতে থাকেন তাহলে বুঝবেন মানুষটি বিপজ্জনক। এদের ব্লক করে রাখাই ভাল।
ফেসবুকে যে ৫টি তথ্য কখনোই দেবেন না
ফেসবুকের মাধ্যমে গোটা জীবনটাই আপনি শেয়ার করে ফেলেন। হয়তো যে বিষয়গুলো কখনোই অন্যদের জানাতে চান না তাই আপনার অসাবধানতায় প্রকাশ পেয়ে যাচ্ছে। বন্ধুদের সঙ্গে যা শেয়ার করছেন, দেখা যাচ্ছে তার চেয়ে বেশি তথ্য অন্যরা পেয়ে যাচ্ছেন। এ ধরনের অস্বস্তিকার অবস্থা এড়াতে ৫টি তথ্য ফেসবুকে শেয়ার না করতে বলেছেন বিশেষজ্ঞরা।
১. ফোন নম্বর :
বাড়ি অথবা ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর ফেসবুক পেজে দেওয়া মানে প্রাঙ্ক কলার, স্টকার, স্ক্যামার এবং আইডেন্টিটি চোররা এ তথ্য চুরি করে নানা অঘটন ঘটাতে পারেন। এ ছাড়া আপনার ফোন নম্বর দিয়ে সার্চ করেও যেকেউ পেজ বের করতে পারবেন। নিরাপত্তা বিষয়ক এক্সপার্ট রেজা মোয়াইনদিন জানান, যে সব সোশাল মিডিয়ার নিরাপত্তাব্যবস্থা খুব ভালো নয়, সে সব জায়গা থেকে মোবাইল নম্বর খুব সহজে চুরি হতে পারে।
২. বাড়ির ঠিকানা :
সম্প্রতি ছুটি কাটাতে কোথায় গেছেন সে ছবিটি পর্যন্ত বিপদ ডেকে আনতে পারে। সেখানে বাড়ির ঠিকানা দেওয়াটা চরম বোকামির সামিল। কন্টাক্ট অ্যান্ড বেসিক ইনফো অংশে এ তথ্য দিয়ে থাকলে তা সরিয়ে ফেলুন। একে এডিট করে সেভ চেঞ্জেস ক্লিক করুন।
৩. পেশা সংক্রান্ত যেকোনো তথ্য :
আপনি কি কাজ করেন না কোথায় করে ইত্যাদি তথ্য ফেসবুকে দেবেন না। আপনার অফিস বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে চাকরিজীবী খুঁজতে গিয়ে আপনার এমন কোনো তথ্য বা ছবি পেতে পারেন যা হয়তো তাদের পছন্দ হবে না। এগুলো পেশাজীবনে বড় ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। যদি তথ্য দিয়েই থাকেন তবে ফেসবুকের টাইমলাইন টুলস ব্যবহার করে স্ক্যান দিন। আপনার আগের পোস্টগুলো দেখতে পারবেন। সেখানে পেশাগত কোনো তথ্য থাকলে তা সরিয়ে ফেলুন।
৪. সম্পর্কের স্ট্যাটাস :
সম্পর্ক জীবনের ব্যক্তিগত বিষয়। এগুলো উন্মুক্ত করে দেওয়ার স্থানা ফেসবুক নয়। এতে ব্যক্তিগত, পারিবারিক এবং সামাজিক জীবনে নানা টানাপড়েন সৃষ্টি হয়। এগুলো নিয়ে যে কেউ নানা ধরনের সমস্যার সৃষ্টি করতে পারেন। তাই সম্পর্ক নিয়ে অহরহ স্ট্যাটাস দেবেন না।
৫. অর্থ সংক্রান্ত কোনো তথ্য :
ফেসবুক বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায়। কিন্তু এখানে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর বা ক্রেডিট কার্ড নম্বর ইত্যাদি দিতে যাবেন না। হ্যাকারদের পাল্লায় পড়লে সর্বনাশ হয়ে যাবে। একবার এ সব তথ্য বাড়ির কম্পিউটারে বসে ব্যবহার করলেও অন্য কেউ ওই কম্পিউটারে বসেই তা ব্যবহার করে আরো অর্থ খরচ করতে পারেন।
যেভাবে হ্যাক হতে পারে আপনার ফেসবুক পাসওয়ার্ড
ফেসবুকের নিরাপত্তা এখনকার সময়ে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নানাভাবে হ্যাক হতে পারে ফেসবুকের পাসওয়ার্ড। আসুন জেনে নেয়া যাক কীভাবে হ্যাক হতে পারে ফেসবুকের পাসওয়ার্ড।
১. ফেইক বন্ধুত্ব
অনেক সময় দেখা যায় হ্যাকার ছদ্মবেশে আপনার সঙ্গে খুব ভালো সম্পর্ক গড়ে এরা। আপনার বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করতে থাকে। এক পর্যায়ে আপনাকে ইনবক্সে লিংক পাঠায়। এসব লিংকে না বুঝে ক্লিক করলেই আপনার গোপন পাসওয়ার্ড এবং ইমেইল হ্যাকারের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে।
২. একাউন্ট ফিশিং
এ প্রক্রিয়ায় হ্যাকার বিবিধ লিংক পাঠাবে। এটা ফেসবুক ম্যাসেজে কিংবা আপনার ইমেইলে তারা পাঠাতে পারে। লিঙ্কগুলো দেখতে অবিকল ফেসবুক থেকে আসা নোটিফিকেশনের মতো। একে বলা হয় ফিশার ওয়েব। অবিকল দেখতে একটি ওয়েবসাইটের মতো হলেও আসলে তা নয়। ফলে যদি ফেসবুক ভেবে লগ ইন করেন তাহলেই আইডি খোয়া যাবে আপনার।
৩. ওয়েবসাইটের শেয়ার বাটন
কিছু ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট আছে যেখানে শেয়ার বাটন ক্লিক করা ঝুঁকিপূর্ণ।
৪. ফেসবুক অ্যাপ
ফেসবুকে নানা অ্যাপ রয়েছে। এগুলো ব্যবহারের ক্ষেত্রে সব সময় সাবধান থাকা উচিত। অনেকেই এসব অ্যাপকে নিজের ইমেল একাউন্ট পাসওয়ার্ডসহ নানা তথ্য দিয়ে দেন। যা অনেক ক্ষেত্রেই এরা বিভিন্ন বিজ্ঞাপন সংস্থার কাছে বিক্রি করে। এভাবে ফেসবুক অ্যাপ ব্যবহারের মাধ্যমে নিজের একাউন্ট হারাতে পারেন।
৫. সাইবার ক্যাফেতে লগ ইন
অনেকে শুধু মোবাইলেই ফেসবুক চালাতে অভ্যস্ত। সাইবার ক্যাফের যুগ প্রায় শেষ হলেও এখনো অনেকে কম্পিউটারে বসে। মাঝেমধ্যে কম্পিউটারে বসেন কেবল বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে। এসব ক্ষেত্রে যারা পাবলিক কম্পিউটার যেমন- সাইবার ক্যাফেতে যান, অনেক সময় তারা একাউন্ট লগ আউট করতে ভুলে যান।
অথবা অনেকেই লগ ইন করার সময়ে খেয়াল করেন না রিমেম্বার পাসওয়ার্ড দেয়া রয়েছে। এভাবে আপনার অজান্তে অন্য কেউ আপনার একাউন্ট এ প্রবেশ করে হ্যাক করে নিতে পারে।
ম্যাসেঞ্জারে সিন অপশন বন্ধ করবেন যেভাবে
বর্তমানে বন্ধুবান্ধব, পরিচিতজন এমনকি অফিসিয়াল যোগাযোগের ক্ষেত্রেও ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার ব্যবহার করা হয়।
অনেক সময় ম্যাসেঞ্জারে কেউ ম্যাসেজ পাঠালে তা আমরা পড়ি। এতে যিনি ম্যাসেজ পাঠিয়েছেন তিনিও বুঝতে পারেন আপনি ম্যাসেজটি দেখেছেন। অনেক সময় দেখা যায় আপনি ম্যাসেজটি পড়লেন কিন্তু রিপ্লাই দিতে চান না। এই সমস্যা এড়াতে আপনি ম্যাসেঞ্জারের সিন অপশনটি বন্ধ করে রাখতে পারেন।
ম্যাসেঞ্জারে সিন অপশন বন্ধ করবেন যেভাবে-
অ্যান্ড্রয়েড ফোন: অ্যান্ড্রয়েড ফোনের টপ বার ড্র্যাগ ডাউন করে অ্যারোপ্লেন আইকনে ক্লিক করে ফ্লাইট মোড অ্যাক্টিভেট করতে হবে। ড্রপ ডাউন মেনুতে অপশনটি না পেলে সেটিংসে যেতে হবে। সেখানেই পাওয়া যাবে ফ্লাইট মোড অপশন।
আইফোন: আইফোনে সিন অপশন বন্ধ করতে সেটিংসে গিয়ে অ্যারোপ্লেন আইকনে ক্লিক করে ফ্লাইট মোড অ্যাক্টিভেট করতে হবে। ফ্লাইট মোড অ্যাক্টিভেট করা অবস্থায় ম্যাসেঞ্জারে গিয়ে ম্যাসেজ পড়ুন। প্রেরণকারী টেরও পাবেন না।
ক্রোম: গুগলের সার্চ বারে গিয়ে আনসিন ফর ফেসবুক লিখে সার্চ দিতে হবে। এরপর আনসিন ফর ফেসবুক-ক্রোম ওয়েব স্টোর লেখা সার্চ রেজাল্টটিতে ক্লিক করুন। অ্যাড টু ক্রোম বাটনে ক্লিক করে এক্সেনশনটি ইনস্টল করে নিন।
এক্সেনশনটি ইনস্টল করার পর উপরে সার্চ বারের ডান দিকে একটি নীল রঙের আইকন দেখা যাবে। এখানে ক্লিক করে ম্যাসেঞ্জারের সিন অপশন বন্ধ করাসহ বিভিন্ন সেটিংসে পরিবর্তন আনা যাবে।
ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছে কিনা জানুন এখনি
সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন মানুষের নতুন পরিচয় গঠিত হচ্ছে। মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সব তথ্যই জমা হচ্ছে আমাদের ফেসবুক প্রোফাইলগুলোতে। অনেক সময়ই আইডি হ্যাক হবার ঘটনাটিও ঘটছে। সাইবার দুর্বৃত্তরা ক্ষতি করার জন্য মুখিয়ে থাকছে।
যদি দেখেন আপনার কোনো বন্ধু আপনাকে বলছেন আপনার অ্যাকাউন্ট থেকে পর্ন লিঙ্ক পোস্ট করা হচ্ছে কী করবেন? জেনে নিন— কীভাবে বুঝবেন আপনার অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছে কি না?
আপনি যতবার ফেসবুকে লগ-ইন করেন, তত বারই ফেসবুকে সেই সেশনটা নোট করা হয়। যেমন আপনি কোথা থেকে প্রোফাইল খুলেছেন, কখন খুলেছেন ইত্যাদি। দেখার জন্য প্রথমে Settings-এ ক্লিক করুন।
সেখান থেকে Security and Login* Where Youre Logged In. এখানেই আপনি যাবতীয় ইনফো পাবেন। যদি দেখেন আপনি ওই একই সময়ে লগ-ইন করেননি। তবে, বুঝবেন আপনার অ্যাকাউন্টটি অন্য কেউ ব্যবহার করছে বা হ্যাক করা হয়েছে।
• এর পর যা যা করবেন…
Password পাল্টে ফেলুন : হ্যাক হয়েছে বুঝতে পারলেই পাসওয়ার্ডটি সবার আগে পাল্টে ফেলুন। যদি হ্যাকার আপনার পাসওয়ার্ড পাল্টে দিয়ে থাকে তবে লগ-ইন করতে পারবেন না। সে ক্ষেত্রে Forgot Password-এ ক্লিক করে ইমেইলে জেনারেটেড পাসওয়ার্ড দিয়ে লগ-ইন করে তারপর পাসওয়ার্ড পাল্টান। পাসওয়ার্ড পাল্টাতে হলে ফলো করুন : Settings* Security and Login* Login*Change password*Edit.
রিপোর্ট করুন : সবার আগে ফেসবুককেই জানান যে, আপনার অ্যাকাউন্ট হ্যাক করা হয়েছে বা অন্য কেউ সেটি ব্যবহার করছে। কীভাবে জানাবেন : যে ব্রাউজারে আপনার অ্যাকাউন্ট লগ-ইন করছেন সেখানই অন্য ট্যাব খুলে টাইপ করুন Facebook Help Center যে পেজটি খুলবে সেখানে Security-i মধ্যে অনেকগুলো অপশন রয়েছে। যেটি সব থেকে ঠিক মনে হবে সেটি ক্লিক করে রিপোর্ট জানান ফেসবুককে। ড্যামেজ কন্ট্রোল: ফেসবুকে জানানোর পর বন্ধুদের জানান। যদি প্রত্যেককে আলাদা করে জানানো সম্ভব না হয় তবে ওয়ালে লিখে পোস্ট করে সবাইকে জানান যে, আপনার অ্যাকাউন্ট হ্যাক্ড হয়েছিল। যদি আপনার অ্যাকাউন্ট থেকে কোনো খারাপ পোস্ট চোখে পড়ে বা কোনো লিঙ্ক চোখে পড়ে তা যেন ক্লিক না করেন। সেটা ব্লক করে ফেসবুকের কাছে Report Spam করেন। এভাবে যতটা সম্ভব সবাইকে সতর্ক করুন।
সন্দেহজনক অ্যাপ ডিলিট করুন : অনেক সময় বিভিন্ন লিঙ্কে ক্লিক করে যখন কোনো অ্যাপ খোলেন তখন আপনা থেকেই সেটা আপনার অ্যাকাউন্টের অ্যাপ লিস্টে অ্যাড হয়ে যায়। সেই অ্যাপ থেকেও অনেক সময় আপনার ব্যক্তিগত ইনফো পাচার হয় এবং হ্যাকারদের সুবিধা করে দেয়। ফলে সন্দেহজনক কোনো অ্যাপ চোখে পড়লেই সেটা ডিলিট করুন। কীভাবে করবেন : Settings* Apps and Websites। এখানে অ্যাপ লিস্ট দেখতে পাবেন।
সতর্ক থাকুন : যদি এমন ঘটে তারপর অবশ্যই সতর্ক হয়ে যান। কোনো অজানা লোকের কাছ থেকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট অ্যাকসেপ্ট করবেন না। যদি বর্তমান ফ্রেন্ড লিস্টে কোনো সন্দেহভাজন থাকেন, তাকে সরিয়ে দিন। তাই এ বিষয়ে সতর্ক হতে হবে।
ফ্রেন্ডলিস্ট থেকে কে আপনাকে ডিলেট করেছে তা দেখে নিন!
ফেসবুকে প্রতিদিনই আমাদের নতুন নতুন ফ্রেন্ড হচ্ছে। কিন্তু এরকম হতেই পারে যে, আপনি আপনার ফ্রেন্ডলিস্টের কোনো কোনো বন্ধুকে আর খুঁজে পাচ্ছেন না। বেশ কয়েকটি কারণে এমনটি হতে পারে। ফ্রেন্ডলিস্টের কোনো ফেসবুক বন্ধু যদি তার নিজের একাউন্ট ডিএক্টিভেট করে দেয় তাহলে সাইটটিতে তার বন্ধুরা তাকে আর দেখতে পাবেন না।
আপনার কোনো ফেসবুক বন্ধু যদি আপনাকে আনফ্রেন্ড করে দেয় অর্থাৎ ফ্রেন্ডলিস্ট থেকে আপনাকে মুছে ফেলে তাহলে আপনি সেই ফ্রেন্ডকে আপনার বন্ধুতালিকায় দেখবেন না। কিন্তু ফেসবুকে যাদের ফ্রেন্ডলিস্ট বিশাল, তাদের পক্ষে সব বন্ধুর হিসেব রাখা কঠিন। কে কখন অ্যাড করল কিংবা কে কখন ডেলিট করে দিল তা টের পাওয়া সহজ কাজ নয়। তবে একটি অ্যাপ কিংবা ব্রাউজার এক্সটেনশনের সাহায্যে আপনি স্বয়ংক্রিয়ভাবেই আপনার ফ্রেন্ডলিস্টে নজর রাখতে পারবেন।
হু ডিলিটেড মি অন ফেসবুক নামক একটি সার্ভিসের মাধ্যমে আপনি সহজেই জানতে পারবেন ফেসবুকে আপনার কোন ফ্রেন্ড আপনাকে রিমুভ/আনফ্রেন্ড করেছে। এজন্য আপনার কম্পিউটারের ব্রাউজারে ছোট্ট একটি এক্সটেনশন হু ডেলিটেড মি ইনস্টল করতে হবে। এরপর ওই ব্রাউজারে আপনার ফেসবুক একাউন্টে ভিজিট করলে কয়েক ঘন্টা পর থেকে নিয়মিতভাবে আপনি আপনার ফেসবুক ফ্রেন্ডলিস্টের নতুন কিংবা হারানো সদস্যদের সংখ্যা জানতে পারবেন।
কে আপনাকে বন্ধু তালিকা থেকে বাদ দিল কিংবা কোন বন্ধুর একাউন্ট বন্ধ হয়ে গেল সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাবে এই অ্যাপটি। ফায়ারফক্স, অপেরা,আইওএস এবং এন্ড্রয়েডের জন্যও অ্যাপটি পাওয়া যাচ্ছে।
ফেইসবুকে বিজ্ঞাপন দিতে কী করতে হবে? জেনে নিন
অনলাইন বিজ্ঞাপনদাতারা বিজ্ঞাপনের জন্য ক্রমেই সোশাল নেটওয়ার্ক ওয়েবসাইট ফেইসবুকের দিকে ঝুঁকছেন। বর্তমানে ফেইসবুকে ২০ লাখেরও বেশি সক্রিয় বিজ্ঞাপন রয়েছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠানটির সর্বশেষ আয় বিবরণীতে শুধু বিজ্ঞাপন থেকেই ৫৬৩ কোটি ডলার আয়ের তথ্য পাওয়া গেছে, যার মধ্যে শতকরা ৮০ ভাগই ছিলো মোবাইল বিজ্ঞাপন থেকে।
অনেকক্ষেত্রেই বিজ্ঞাপনদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর ফেইসবুক বিজ্ঞাপন দেওয়ার পদ্ধতি ত্রুটিপূর্ণ হয়ে থাকে। এতে বিজ্ঞাপনগুলোর উদ্দেশ্য তো মেটেই না, বরং বিজ্ঞাপনদাতার পয়সা খরচ হতে থাকে।
আপনি যদি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, নতুন উদ্যোক্তা বা কোনো প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানের মালিক হয়ে থাকেন, তবে ফেইসবুকে সাশ্রয়ে যথাযথভাবে উন্নতমানের বিজ্ঞাপন দিতে নিচের চারটি টিপস সহায়তা করবে আপনাকে।
১। কনভার্সন পিক্সেল:
প্রতিটি বিজ্ঞাপনের প্রচারণাকালে বিজ্ঞাপনদাতার উচিত কনভার্সন পিক্সেল তৈরি করা। বিজ্ঞাপনের উদ্দেশ্য বিক্রি বাড়ানো বা ইমেইল অ্যাড্রেস সংগ্রহ যাই হোক না কেনো, কনভার্সন পিক্সেল অ্যাকুইজিশন প্রতি আপনার ব্যয়ের হিসেব রাখবে। এতে বিজ্ঞাপনটি কতোটা কার্যকরী ও সফল, সে বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে।
২। বিজ্ঞাপনের অবস্থান:
ফেইসবুকে *অ্যাড ম্যানেজার* ফিচারে *ব্রেকডাউন* এর নিচেই রয়েছে *প্লেইসমেন্ট* অপশনটি। এ অপশনটি ব্যবহার করে ডেস্কটপ কম্পিউটার ও মোবাইলের নিউজ ফিড সহ অন্যান্য জায়গায় বিজ্ঞাপনের সফলতার উপর নজর রাখা এবং এর উপর ভিত্তি করে অকার্যকর বিজ্ঞাপনগুলো সরিয়ে নেওয়া সম্ভব। তাই ফেইসবুক বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে সাশ্রয় করতে চাইলে এই অপশনে নজর রাখার কোনো বিকল্প নেই।
৩। সময়:
দিনের ভিন্ন ভিন্ন সময়ে অনলাইনে ক্রেতাদের সাড়া পাওয়ার উপর ভিত্তি করে ফেইসবুকে বিজ্ঞাপন দেওয়ার সময়সূচি নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। এজন্য ফেইসবুক অ্যাডস ম্যানেজার ফিচারে রয়েছে *বাই টাইম* অপশনটি। এটি ব্যবহার করে দৈনিক, সাপ্তাহিক, দ্বি-সাপ্তাহিক ও মাসিক ভিত্তিতে বিজ্ঞাপনের সময়কাল নির্ধারণ করা যাবে।
৪। বয়স ও লিঙ্গ:
নারী-পুরুষ, তরুণ-বৃদ্ধ ভেদে পণ্যের চাহিদা এবং বিজ্ঞাপনে সাড়া দেওয়ার হার ভিন্ন হয়ে থাকে। একারণেই ফেইসবুক অ্যাড ম্যানেজারে *ব্রেকডাউন* অপশনের নিচেই থাকা *এইজ অ্যান্ড জেন্ডার* কলামে বয়স ও লিঙ্গভেদে ওয়েবসাইটে প্রবেশ, ব্যয় এবং কনভার্সনের হিসেব পাওয়া যাবে। এর ওপর ভিত্তি করে বিজ্ঞাপনের উদ্দেশ্য ও ধরন নির্ধারণ করলে সফলতা অর্জনের সম্ভাবনা বেড়ে যায় অনেকখানি। ফেইসবুক অ্যাডস ম্যানেজার ফিচারে এসব কিছু খুঁটিনাটি কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ অপশন ব্যবহার করেই আপনার বিজ্ঞাপন থেকে সর্বোচ্চ লাভের মুখ দেখতে পারেন।
ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারের মজার কিছু তথ্য
এই ফেসবুকের ম্যাসেঞ্জার প্রায় সবাই ব্যবহার করে থাকেন। তবে ম্যাসেঞ্জারের ব্যবহার কতজন জানেন? অনেকে হয় তো শুধু চ্যাটিং পর্যন্তই সীমাবদ্ধ। এর বাইরে অনেকে কিছুই জানেন না। ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে এমন কিছু ফিচার রয়েছে যেগুলি সম্পর্কে অনেকেই জানে না। তবে যারা দক্ষ, তাদের কাছে বাঁ হাতের ব্যাপার। তাই বলে বিষয়গুলো সকলেই জানেন, এমনটাও নয়। তাহলে আসুন জেনে নেওয়া যাক এরকম অজানা বিষয়গুলো।
১. বন্ধুদের নিজের মতো করে নাম দিতে চান? তা-ও সম্ভব। নোটিফিকেশন্স-এ গেলেই নিকনেমঅপশন পাবেন। বাকিটা আপনার উপর।
২. বন্ধুর সঙ্গে দাবা খেলতে চান? চ্যাট বক্সে গিয়ে @fbchess টাইপ করুন।
৩. কোথাও ফেঁসে গিয়েছেন? নিজের লোকেশন জানাতে চান বন্ধুকে? স্রেফ লোকেশন আইকন চাপুন। সহজেই দেখিয়ে দেবে লোকেশন।
৪. ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে আপনি বন্ধুর হয়ে পেমেন্টও করতে পারবেন। তিনটি ডট-এ ক্লিক করে পেমেন্টস অপশন বেছে নিন।
প্রথমবার পেমেন্টের জন্য ডেবিট কার্ডের সঙ্গে কানেক্ট করতে হবে।
৫. প্রতিটি কথোপথনের রং পাল্টাতে পারবেন। কনট্যাক্ট-এ গিয়ে চেঞ্জ কালার অপশন পাবেন।
৬. বন্ধুর মন খারাপ? মুড ভাল করতে চান? চ্যাট-এ গিয়ে @dailycute টাইপ করুন। দেখুন কী হয়!
৭. ধরা যাক, স্বামী বা স্ত্রীর পাশে বসে বন্ধুর সঙ্গে চ্যাটে তার সমালোচনা করছেন। এর মধ্যে মাঝে একবার উঠে কোন কাজে গিয়েছেন।
প্রিভিউ সমালোচিত ব্যক্তির চোখে পড়ে গেল! ভাবতে পারছেন, কী হবে? সেটিংস-এ গিয়ে, নোটিফিকেশনস প্রিভিউ অফ করে দিন। ব্যাস সমস্যার সমাধান।
৮. এবারে একটি বাস্কেটবল ইমোজি পাঠিয়ে দেখুন বন্ধুকে। দুজনে মিলে খেলতে পারবেন বাস্কেটবল।
৯. ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ছাড়াই আপনি ম্যাসেঞ্জার ব্যবহার করতে পারেন। ম্যাসেঞ্জার ইনস্টল করে ফোন নম্বর দিয়ে লগ-ইন করুন।
১০. এক ম্যাসেঞ্জারে একাধিক একাউন্টে ঢোকার সুবিধা রয়েছে।
ফেসবুক অ্যাকাউন্টের জন্য ১০টি না
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এখন শুধু পরস্পরের মধ্যে সংযোগ স্থাপনই করছে না, বরং চাকরি, কর্মক্ষেত্র থেকে শুরু করে ব্যবসা–রাজনীতি সবকিছুর ওপর প্রভাব ফেলেছে। সুতরাং এটা এখন শুধু আপনার ব্যক্তিগত জীবনের অংশই না, এটা আপনার পেশা জীবনেরও অংশ।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অন্যতম জনপ্রিয় মাধ্যম ফেসবুক। আর এই মাধ্যমকে কাজে লাগাতে পারেন যদি না আপনি নিচের কাজগুলো অনুসরণ করেন।
১. আপনার প্রকৃত নাম পরিবর্তন করবেন না
ফেসবুকে অনেক সময় অনেকে নকল নাম বা রূপক নাম ব্যবহার করে থাকেন। এমনটি উচিত নয়। কেউ যদি আপনার নাম জিজ্ঞেস করে আপনি নিশ্চয় বলবেন না, আপনার নাম নীল দরিয়ার মাঝি, সাগর পাড়ের কন্যা, আমি কষ্টে আছি অথবা উড়ন্ত ছেলে। কারণ এগুলো আপনার নাম নয়। একজন চাকরিদাতা বা ব্যবসায়ী যদি আপনার সম্পর্কে ধারণা নিতে সার্চ ইঞ্জিনে আপনাকে খোঁজেন তবে এমন নাম তাদের আপনার সম্পর্কে ভালো ধারণা দেবে না। এমন নামকরণ ফেসবুকের নীতিমালার বাইরে। যে কেউ অভিযোগ করলে আপনার অ্যাকাউন্টটি তারা বন্ধ করে দিতে পারে। তাই নাম ব্যবহারের ক্ষেত্রে যদি নাম দুই অংশের হয় তবে প্রথম ও শেষ নাম ব্যবহার করুন। যদি তিন অংশের হয় তবে মধ্য নামও ব্যবহার (মধ্য নামের initial ব্যবহার করতে পারেন) করুন। নিজ ভাষা অথবা ইংরেজিতে নাম লিখতে পারেন, কিন্তু এমন অক্ষর ব্যবহার করবেন না যেটা বুঝতে অসুবিধা হয়।
২. শিরোনাম ব্যতীত ছবি পোস্ট করবেন না
এমনটি হতে পারে আপনি বোনের সঙ্গে ছবি পোস্ট করছেন কিন্তু কোনো শিরোনাম লেখেননি। আপনার বন্ধুরা হয়তো আপনাকে চেনে, কিন্তু আপনার বোনকে চেনে না। এ রকমের ছবিতে আপনার বন্ধুদের মন্তব্য আপনাকে বিব্রত করতে পারে। এ জন্য এ ধরনের ছবি পোস্ট করার আগে অবশ্যই শিরোনাম যোগ করবেন। এতে ছবি পোস্টের উদ্দেশ্য বোঝা সহজ হয়। ছবি নিজেই যদি শিরোনাম হিসেবে কাজ করে তাহলে হয়তো শিরোনামের প্রয়োজন নেই।
৩. শুধু লাইক পাওয়ার জন্য কাউকে সংযুক্ত করবেন না
শুধু লাইক পাওয়ার জন্য এমন কাউকে ছবি বা পোস্টে সংযুক্ত করবেন না যিনি এর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত নন। আপনি জানেন না এতে তিনি আনন্দিত হবেন, না বিরক্ত হবেন। যদি সংযুক্ত করা জরুরি মনে করেন তবে পূর্ব অনুমতি নিয়ে নেবেন।
৪. ব্যক্তিগত কথাবার্তা ওয়ালে পোস্ট করবেন না
ব্যক্তিগত কথাবার্তা আদানপ্রদানের জন্য ফেসবুক অথবা অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়াতে মেসেজ অপশন আছে। এ জন্য ব্যক্তিগত কথাবার্তা ওয়ালে পোস্ট না করে মেসেজ করবেন। যেমন; আপনি আপনার বন্ধুর কাছে টাকা পাবেন, আপনি এই টাকাটা চাওয়ার জন্য তার ওয়ালে লিখতে যাবেন না। প্রয়োজনে কল অথবা মেসেজ করবেন।
৫. চেইন স্ট্যাটাস পোস্ট করবেন না
আপনিও হয়তো এমন ইমেইল পেয়ে থাকবেন—কেউ আপনাকে নির্দিষ্ট ইমেইল পাঠিয়ে বলল, এই ইমেইলটি আরও ১০ জনকে পাঠাতে হবে অন্যথায় আপনার ভয়ানক বিপদ হবে। সেরকম ফেসবুকের নিউজ ফিডে কিছু ছবি বা লেখা দিয়ে বলা হলো আপনাকে লাইক ও শেয়ার করতে হবে, না হলে বিপদ হবে। অথবা বলা হলো আপনি যদি মুসলমান/হিন্দু বা অন্য কিছু হন, লাইক করুন, আমিন লিখুন, শেয়ার করুন। এ রকম চেইন স্ট্যাটাস পোস্ট করবেন না। এটা একরকম মানুষের আবেগ নিয়ে খেলা। যদি সামাজিক সচেতনতা বিষয়ক কিছু হয় তবে মানুষকে সাধারণ অনুরোধ করবেন।
৬. অপরিচিত লোকদের বন্ধু হওয়ার অনুরোধ করবেন না
অনেকের হয়তো এমন ধারণা আছে যে, ফেসবুকে বন্ধুর সংখ্যা যার যত বেশি তার জনপ্রিয়তার তত বেশি। এ কথা হয়তো সত্য, বাস্তব জীবনে যত বেশি মানুষ আপনাকে চেনে আপনি তত বেশি পরিচিত। কিন্তু ফেসবুকে সম্পূর্ণ অজানা মানুষকে যোগ করার মাঝে নয়। যদি কাউকে কোনো না কোনোভাবে চেনেন এবং মনে করেন তার সঙ্গে যোগ হলে উভয়ই উপকৃত হতে পারেন তবে ব্যক্তিগত অনুরোধ করবেন।
৭. ভুয়া সংবাদ পোস্ট করবেন না
ফেসবুক হলো ভুয়া সংবাদের অন্যতম উৎস। এখানে সবাই সাংবাদিক। এখানে সংবাদ পরিবেশনে সবাই মুক্ত। তাই যেকোনো সংবাদভিত্তিক পোস্টের আগে যাচাই করে নেবেন সংবাদটি সঠিক উৎস থেকে আসছে কিনা। মনে রাখবেন একটি ভুল সংবাদ ১০টি স্বাভাবিক জীবনের ওপর ক্ষতি বয়ে আনতে পারে।
৮. ভুল ব্যক্তিগত তথ্য প্রধান করবেন না
ধরুন, একটি চাকরির জন্য আপনার জীবনবৃত্তান্ত চাইল, আপনি নিশ্চয় আপনার জীবনবৃত্তান্তে ভুল তথ্য প্রধান করবেন না। অনেক চাকরি আছে যেগুলো ফেসবুকের আইডি দিয়ে লগইন করে আবেদন করতে হয়। সুতরাং আপনার তথ্য যদি ভুল থাকে তবে চাকরিদাতা আপনার সম্পর্কে ভুল তথ্য পাবে যেটা আপনার জন্য কক্ষনোই মঙ্গলজনক নয়। এ ছাড়া ভুল তথ্য মানুষকে আপনার সম্পর্কে খারাপ ধারণা দেবে। তাই সকল তথ্য (পেশাগত, শিক্ষাগত, ব্যক্তিগত) সঠিক ও সমসাময়িক রাখুন।
৯. অশালীন মন্তব্য করবেন না
হয়তো ফেসবুক মন্তব্যের জন্য উন্মুক্ত এক জায়গা। কিন্তু মনে রাখবেন আপনার মন্তব্য আপনার ব্যক্তিত্বের পরিচায়ক। আপনার মন্তব্য থেকে মানুষ আপনার সম্পর্কে ধারণা নেবে। কথা বলার স্বাধীনতার ও সীমাবদ্ধতা আছে। আপনার মন্তব্য যদি কাউকে ব্যথা দেয় কিংবা কারও সম্মানহানির কারণ হয় সে দিকে নজর রাখবেন। মোট কথা ফেসবুকে আপনার সকল কার্যক্রম আপনার আচার–ব্যবহারেরই পরিচয় বহন করে, সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন।
১০. ১৩ বছর বয়সের আগে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নয়
১৩ বছর বয়সের আগে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খোলা ফেসবুকের নীতিমালার বাইরে। এটা তাদের মানসিক ও শারীরিক অবস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এমনকি বড়দেরও অধিক ফেসবুক ব্যবহার মানসিক, শারীরিক ও সামাজিক সমস্যার সৃষ্টি করে। সাধারণত উন্নয়নশীল দেশগুলোতে অভিভাবকের অসচেতনতার কারণে অনেক শিশুই ফেসবুকে আসক্ত হয়ে পড়ে যা তাদের লেখাপড়া ও সামাজিক বিকাশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। সুতরাং আপনার পরিচিত কেউ যদি এমনটি করে তাকে বুঝিয়ে অ্যাকাউন্টটি মুছে দিন অথবা ফেসবুকে রিপোর্ট করুন।